সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট পড়ার ইচ্ছে সকলেই থাকে তবে এ সুযোগ পায় না। ফলাফল ও সিটের স্বল্পতা সহ বিভিন্ন কারণে তা ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে প্রাইভেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটগুলোতে পড়তে হয়। তবে অনেকেরই মনে দ্বিধা থাকে যে হয়তো বেসরকারিতে পড়ার কারণে তার ফলাফলের মূল্যায়ন হবে না বা চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হবে। এ ধরণের ধারনা আসলে ভুল।
সরকারি এবং প্রাইভেট পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচি একই এবং রেজাল্টের মানও একই। তাই চাকরির ক্ষেত্রে কোন ধরনের বৈষম্যের ব্যাপার থাকে না। তবে বেসরকারি পলিটেকনিকে পড়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু অসুবিধা থাকলেও তেমনি সুবিধাও রয়েছে।
বেসরকারি পলিটেকনিক এ পড়ার সুবিধা:
১. প্রাইভেট পলিটেকনিকে পড়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল নিজের পছন্দের ডিপার্টমেন্টে পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। সরকারি পলিটেকনিকে এই সুবিধাটি পাওয়া যায় না, সেখানে যে বিষয়ে চান্স পায় সে বিষয়টিতেই পড়তে হয়।
২. বেসরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষকরা তুলনামূলক বেশি আন্তরিক হয়। সরকারির তুলনায় শিক্ষার্থী কম থাকায় ভালভাবে খেয়াল রাখতে পারেন শিক্ষকরা। অনেক সময় ব্যক্তিগত ভাবেও শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিয়ে থাকেন তারা।
৩. বেসরকারি পলিটেকনিকে থিউরি ক্লাসগুলো বেশ নিয়মিত গুরত্ব সহকারে নেয়া হয় যার ফলে পরীক্ষার আগেই সিলেবাস শেষ হয়ে যায়।
৪. প্রাইভেট পলিটেকনিকের অন্যতম একটি সুবিধা হলো এদের ক্যাম্পাস সাধারণত রাজনীতিমুক্ত হয়।
বেসরকারি পলিটেকনিক-এ পড়ার অসুবিধা:
১. সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো সরকারির তুলনায় প্রাইভেট পলিটেকনিকে খরচ অনেক বেশি। সরকারি পলিটেকনিকগুলোতে সরকার বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সহ বিভিন্ন অনুদান দেয়া হয় যা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো পায় না। প্রতিষ্ঠান ভেদে যা খরচ কমবেশি হয়ে থাকে।
২. বেসরকারি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যটাই প্রধান থাকে বলে এরা এখানকার শিক্ষকদের বেতন কম দেয়। যার ফলে ভালো অভিজ্ঞ শিক্ষকরা এসব প্রতিষ্ঠানে আসেন না। আবার ভালো শিক্ষক আসলেও বেশি দিন থাকেন না। ঘন ঘন শিক্ষক পরিবর্তনের কারণে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার ক্ষেত্রে ভালো নির্দেশনা পায় না।
৩. ল্যাব এবং ওয়ার্কশপ তৈরিতে যে পরিমানে খরচ লাগে, প্রাইভেট পলিটেকনিকগুলোর সে সামর্থ্য থাকে না থাকায় স্বল্প পরিমাণে ল্যাব থাকে। যেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এগুলোতে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি থাকে না।
৪. অধিকাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে থিউরির শিক্ষক দিয়েই ল্যাব ও ওয়ার্কশপের ক্লাস চালানো হয়। দক্ষ ও অভিজ্ঞ ল্যাব ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ দেয়া হয় না। যার কারণে শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে শিক্ষা ভাল ভাবে পায় না।
এই ধরনের অসুবিধাগুলো নিয়েও প্রাইভেট পলিটেকনিকে পড়ে ব্যাক্তিগত চেষ্টায় ভালো ফলাফলা করা সম্ভব। এছাড়া প্রাইভেট পলিটেকনিকে ভর্তির আগে ভালো করে খোঁজ খবর নিয়ে সেই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবেন। আপনি এখানে লক্ষ্যাধিক টাকা খরচ করা পড়াশুনা করবেন, সুতরাং অবশ্যই খোঁজ নেওয়া উচিৎ। এমনকি ভর্তির আগে সেই পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটটি ফলাফলার মান কেমন জানাটা জরুরী।
আপনাদের ক্যাম্পাসের তথ্য ও খবর প্রকাশ করতে এই ঠিকনায় মেইল করুন-newsdiploma@gmail.com