শিক্ষক সংকটসহ নানা জটিলতায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে লক্ষ্ণীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষা কার্যক্রম। এতে মানসম্মত শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষক-কর্মকর্তার ১২৪টি অনুমোদিত পদ থাকলেও এখানে নিয়মিত শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ২২ জন। ফলে বাধ্য হয়েই এক বিষয়ের শিক্ষক নিচ্ছেন অন্য বিষয়ের ক্লাস। এতে ব্যাহত হচ্ছে প্রকৃত শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষক ও যন্ত্রপাতি সংকট থাকায় যথাসময়ে হচ্ছে না তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক ক্লাসও। ফলে ব্যাহত হচ্ছে ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার গুণগত মান। হুমকির মুখে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে কারিগরি শিক্ষাই এখন শিক্ষার্থীদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই দ্রম্নত শিক্ষক সংকট দূর করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, কারিগরি শিক্ষার প্রসার বৃদ্ধি ও দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করা হয় লক্ষ্ণীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। লক্ষ্ণীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা কারিগরি শিক্ষ গ্রহণের মাধ্যমে স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হন লক্ষ্ণীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির সিভিল, কম্পিউটার, আর্কিটেকচার, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স ডিপার্টমেন্টে প্রায় ১৮শ’ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। তবে দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষক সংকটসহ নানা জটিলতায় এখন হুমকির মুখে পড়েছে এই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষা কার্যক্রম।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, এ ইনস্টিটিউটে শিক্ষক-কর্মকর্তার ১২৪টি পদের বিপরীতে এখানে অধ্যক্ষসহ কর্মরত আছেন মাত্র ২২ জন শিক্ষক। এছাড়া স্কিল অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রকল্পের আওতায় কর্মরত তিনজন শিক্ষকসহ প্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছেন আরও ১০ জন খন্ডকালীন শিক্ষক। তীব্র শিক্ষক সংকটে প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। তবে শিক্ষকরা বলছেন, এত সীমিত জনবল দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। নিয়মিত করানো যাচ্ছে না তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক ক্লাসও। এতে কারিগরি শিক্ষার গুণগতমানের ওপর প্রভাব পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে সিভিল ডিপার্টমেন্টে ২৪ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র দুইজন। আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টে ১২ জন শিক্ষককের বিপরীতে নিয়মিত শিক্ষক একজনও নেই। এই বিভাগে রয়েছেন প্রকল্প থেকে আসা ২ জন শিক্ষক। তারাও আবার পাচ্ছেন না ৫৩ মাস ধরে বেতন।
এদিকে শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষক সংকটের কারণে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না। নানা সংকটে ব্যবহারিক ক্লাস থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। রয়েছে অবকাঠামোগত সমস্যাও। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। নিয়মিত ক্লাস না পাওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে শিক্ষাজীবন।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম আরও জানান, পর্যাপ্ত শিক্ষক সংকটের পরও শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজস্ব খাতে ২২ জন ও খন্ডকালীন ৮ জনসহ ৪০ জন দিয়ে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাঠদান কার্যক্রম চলছে। শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানে হয়েছে। শিক্ষক সংকট নিরসন হলে প্রতিষ্ঠানটি ফিরে পাবে স্বাভাবিক কার্যক্রম।